শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

আপনি কি শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় খুজে পাচ্ছেন না? এই আর্টিকেল টি শরীর ব্যথাকে কেন্দ্র করেই।সম্পূর্ণ পড়া শেষ করলেই আপনি বুঝতে পারবেন ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু উপাদান ব্যবহার করে এবং কিছু নিয়ম মানার মাধ্যমে শরীর ব্যথা দূর করতে পারেন খুব সহজেই।
শরীর ব্যথার সঠিক কারণ এবং মাত্রা না বুঝতে পারলে ঘরোয়া উপায়ে এর প্রতিকার সম্ভব না।চিন্তার কিছু নেই, শরীর ব্যথা সম্পর্কে সকল বিষয় এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে।

ভূমিকা

শরীর ব্যথা অনেক কারণে হতে পারে। একটু ব্যথা হলেই আমরা কিছু না বুঝেই ব্যথার বিভিন্ন ঔষধ খেয়ে থাকি। এসব ব্যথার ঔষধ শরীরের ওপর অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে।তাই লক্ষন অনুযায়ী শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় চেষ্টা করা উচিত।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার হওয়া কিছু উপাদান দিয়েই যদি শরীর ব্যথা দূর করা যায় ,তাহলে কেমন হয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক শরীর ব্যথা সম্পর্কে খুঁটিনাটি সবকিছু।

সারা শরীর ব্যথা করে কেন

শরীর ব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে করা সাধারন কিছু ভুল এর কারনে হতে পারে। আবার জটিল কিছু অসুখ এর লক্ষন হিসেবেও হতে পারে। শরীর ব্যথার কারণগুলো হলো-
  • শরীরের ক্ষমতার অতিরিক্ত পরিশ্রম করা।
  • ঘুমানোর সময় শুয়ে থাকার ধরন সঠিক না হলে।
  • ভাইরাস এর সংক্রামণ এর ফলে জ্বর হলে।
  • অতিরিক্ত ঘাম হলে,ঘাম বসে শরীর ব্যথা হতে পারে।
  • কিডনির সমস্যা থাকলে।
  • যকৃত এর সমস্যার কারনে অনেক সময় ভিটামিন-ডি এর অভাব হলে।
  • শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমা হলে।
  • ভিটামিন বি-১২ এর অভাব হলে।

শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

শরীরে ব্যথা দেখা দিলেই যখন তখন ব্যথার ঔষধ খাওয়া ঠিক না। এতে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব পরে। শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া কিছু উপায় আছে।
  • শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাবে কোষগুলো শুকিয়ে যায়,ফলে ব্যথা দেখা দিতে পারে তাই পরিমান মতো পানি পান করতে হবে।
  • ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে শরীর ব্যথা হতে পারে তাই প্রতিদিন সকালে রোদে হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
  • শরীর ব্যথা থাকলে কঠোর পরিশ্রম করে ব্যয়াম না করে ,নিয়মিত যোগ ব্যয়াম করতে হবে।
  • রক্তে কার্বোহাইড্রেড এর পরিমান বেড়ে গেলে শরীরে ব্যথা হতে পারে তাই ডায়েট অনুযায়ী খাবার খেতে হবে।
  • সেনাবাহিনীদের অনেক কঠোর পরিশ্রম এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।তাদের নিয়মিত আদা খাওার জন্য বলা হয়।কারন আদা ব্যথা প্রশমনে অনেক সহায়ক।তাই শরীর ব্যথা হলে ২ গ্রাম করে আদা খেলে ঠিক হতে পারে।
  • হলুদ প্রদাহ সারাতে অনেক কার্যকারী। কঠোর পরিশ্রম এর কারনে শরীরের অভ্যন্তরে প্রদাহের সৃষ্টি হলে ,হলুদ খাওয়ার পরিমান বাড়ানো যেতে পারে।
  • অনেক সময় মানসিক চাপের কারনে শরীর ব্যথা হতে পারে।সেরকম সমস্যা বুঝতে পারলে যথেষ্ট পরিমান বিশ্রাম নিতে হবে এবং চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
উপরক্ত পদ্ধতিগুল সমস্যার ধরনের ওপর ভিত্তি করে নিতে হবে।সমসসা গুরুতর হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করতে হবে

কি খেলে শরীরের ব্যথা কমে

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেসব খাবার খায়,সেসবের মধ্যে অনেক খাবার আছে ব্যথা নাশক উপাদান সম্পন্ন। ব্যথার উপসর্গ কমানো কিছু খাবার গুলো হলো-
  • রসুন ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে। রসুন রোজ খাওয়ার মাধ্যমে অথবা তেল এর সাথে গরম করে সেক দেওয়ার মাধ্যমে ব্যথা উপসম হয়।
  • সামুদ্রিক মাছ ভিটামিন-ডি এর একটি অন্যতম উৎস।পরিমান মতো এসব সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে।
  • কফি পান করা মাইগ্রেন সহ শরীরের অন্যান্য ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা সাময়িক সময় এর জন্য ।
  • তিল বীজ এর একটি অন্যতম উপাদান ম্যাগনেসিয়াম ,যা শরীরের ব্যথার জন্য উপকারি। রোজ মধুর সাথে তিল বীজ খাওয়া যেতে পারে।
  • পুদিনা পাতায় ঠাণ্ডা অনুভুতি জাগানো কিছু উপাদান থাকে যা ব্যথার জায়গাকে শিথিল করতে সাহায্য করে এবং আরামের অনুভুতি জাগায়।
শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে এসব খাবার অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।

শরীর ব্যথায় কোন ফল খাওয়া উচিত

অনেক ফলের মধ্যেই ব্যথা নাশক উপাদান পাওয়া যায়। বিভিন্ন ফল বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ফল হল-
  • চেরি এমন একটি ফল যা সরাসরি ব্যথা উপশমে কাজ করে থাকে। শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ জনিত কোন ব্যথা হলে চেরি হতে পারে সবচেয়ে দ্রুত উপকারি একটি ঔষধ।
  • পেঁপে কাচা অবস্থায় এক ধরনের এনজাইম ধারন করে যা শরীরে এসিড থেকে তৈরি ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।এর ফলে শরীরে তৈরি ব্যথা আরাম হয়।
  • ক্যাপসাইসিন শরীরের ব্যথার জন্য অনেক কার্যকারী যা আমাদের নিত্য ব্যবহার করা মরিচে পাওয়া যায়।তাই সকলের উচিত রোজ কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস করা।
  • বিভিন্ন রকম এর বাদাম আমাদের শরীরের ভিটামিন-ডি এর অভাব পুরন করে থাকে। আমাদের নিয়মিত এসব বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
এসব ফল ছাড়াও অনেক ফল রয়েছে যেগুলো শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কালো যেকোনো ফল( যেমনঃ জাম,কালো আঙুর), আনারস, কমলা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

শরীর ব্যাথার ট্যাবলেট এর নাম

আমাদের এই ব্লগের উদ্দেশ্য যদিও শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা, তবুও বিভিন্ন ঔষধ সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি।মনে রাখতে হবে, শরীর ব্যথা হলে ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ খাওয়া ঠিক না। শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যথার জন্য বিভিন্ন রকম ঔষধ রয়েছে।
  • হাড়ে ব্যথার অনুভিতি দেখা দিলে কিটোরলাক গ্রুপের ঔষধ কার্যকর হয়।
  • হাড়ের জোড়ায় ব্যথা অনুভুত হলে নাপ্রক্সিন জাতীয় ঔষধ বেশি কার্যকর হবে।
  • রগের জড়তা জনিত ব্যথা হলে মরফিন কার্যকারী ব্যথার ঔষধ।
  • মাথা ব্যথা হলে সাধারন ভাবে প্যরাসিটামল এবং মাইগ্রেন এর ব্যথা হলে টাফনিল খেলে ব্যথা উপশম হয় ।
এসব ব্যথার ঔষধ এর অনেক ক্ষতিকর দিক থাকায় ডাক্তার এর পরামর্শ দেওয়া ঔষধ ব্যতিত কিছু খাওয়া যাবে না।

যে কোন ব্যাথা দূর করার দোয়া

আরবি-বাংলা উচ্চারণঃ "আউজু বি-ইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু"

বাংলা অর্থঃ আল্লাহর নামে আমি আল্লাহর অসীম সম্মান ও তাঁর বিশাল ক্ষমতার অসিলায় আমার অনুভুত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

লেখকের মন্তব্য

জটিল কোনো রোগের লক্ষন হিসেবে শরীর ব্যথা হতে পারে তাই না জেনে ব্যথার ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়। প্রথমে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথা নিরাময়ের চেষ্টা করতে হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে ব্যথা না কমলে অবশই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ব্লগটিতে উল্লেখিত শরীর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করলে আশা করি উপকৃত হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url